শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ও কুড়িয়ে পাওয়া ধানে শীতবস্ত্র কেনার স্বপ্ন যাদের 

পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি 

ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ও কুড়িয়ে পাওয়া ধানে শীতবস্ত্র কেনার স্বপ্ন যাদের 

সূর্য উঠার সাথে সাথেই ওরা ছুটছে ধানের মাঠে। এখন আমন মৌসুম। চলছে ধানকাটার মহোৎসব। ওরা দিন আনে-দিন খায় পরিবারের সন্তান। ওদের বাবাদের শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ নেই! তাই ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ও মাঠের কুড়িয়ে পাওয়া ধান বেচে কিনতে হবে শীতের গরম কাপড়। 

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মাঠ পর্যায়ে বৃহত্তম ধানের মাঠ। শীতের আগেই ঘরে ধান তুলতে পারায় কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে যেমন ফুটেছে তৃপ্তির হাসি! তেমনি ধান ক্ষেতের ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে মনের আনন্দে ধান বের করছে শিশু-কিশোরের দল। ওদের হাতে ব্যাগ, কাঁধে কোদাল ও খুন্তি। 

ওরা একেক জন সারাদিনে সংগ্রহ করছে ৫-৭ কেজি ধান। ধানের পরিমাণ বেশি হলেই ওরা স্থানীয় ধানের আড়তে বিক্রি করছে। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের দিঘীপাড়া ও দুধকুড়ি বৃহত্তম মাঠে সরেজমিনে দেখা যায়, এমন দৃশ্য। 

ছোটন, উজ্জল, রানা, সাজু, মানিক ও সবুজের সাথে কথা হলে তারা জানায়, ‘কৃষকেরা ধান কেটে নিয়ে গেলে অনেক ধানের শীষ এমনিতেই পড়ে থাকে। সেগুলো কুড়ায়ে এবং ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে আমরা যে ধান পাই, তা বেচে শীতের গরম কাপড় কিনি। আমরা গরিব পরিবারের সন্তান। আমাদের বাবাদের শীতের কাপড় কেনার সামর্থ নেই। তাই এ ধান বেচেই শীতের গরম কাপড় কিনতে হবে।’ 

পত্নীতলা উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের দিঘীপাড়া গ্রামে কৃষক আজিজার রহমান (৬৪) বলেন, ‘সমাজের ধনী শ্রেণির লোকেরা যদি গরিব-অসহায়দের জন্য শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা করে দিতো-তাহলে অনেক শিশু কিশোরকে স্কুল কামাই করে মাঠে মাঠে হন্য হয়ে ক্ষুধার্ত পেটে-জীর্ণ শরীরে ঘুরে ঘুরে ধান কুড়াতে হতো না। আমাদের সমাজে বড়-বড় লোকের কথা বলার লোকের অভাব নেই-কিন্তু গরিবের বন্ধুর বড়ই অভাব।’

টিএইচ